খেলাধুলা ও বিনোদনঃ
প্রাচীন যুগে পিরোজপুর অঞ্চলের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ ছিল কর্মক্লান্ত চাষী, তারা আনন্দ বা বিনোদনের অবসর পেত সামান্যই। তথাপিও পিরোজপুরের ক্রীড়া জগতের ইতিহাস যথেষ্ট সমৃদ্ধ। ঐতিহ্যবাহী ও উল্লেখযোগ্য খেলার মধ্যে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, এ্যাথলেটিকস্, টেবিল টেনিস, ভলিবল, কাবাডি, ঘুড়ি উড়ানো ইত্যাদি।
পিরোজপুরের ক্রীড়াজগতে ফুটবলের কথা স্ব-মহিমায় ভাস্বর। পঞ্চাশের দশক থেকে শুরু করে বর্তমান পর্যন্ত যারা ফুটবলে প্রতিভার স্বাক্ষর রাখতে সক্ষম হয়েছেন তারা হলেন মুহম্মদ মিনা, বেলায়েত, সানাউল্লাহ, শংকর সিংহ, ফারুক, এনায়েত, মানিক, আব্দুস সালাম মধু , তোতা, বাহাদুর, লাবু , নান্না, লিটন , মেরাজ, এমিলি, এমেকা প্রমুখ।
ক্রিকেটার হিসাবে আব্দুল হাদী রতন ও জাতীয় দলের শাহরিয়ার নাফিস সহ ১ম শ্রেণীর অনেক ক্রিকেটার এ জেলার মুখ উজ্জ্বল করেছে।
এ্যাথলেট হিসাবে আনসার শিকদার(শর্টপুট), পনু(সাইক্লিং), তানিয়া (উচ্চ লাফ), বাহাদুর(দৌড়) প্রমুখের নাম উল্লেখ করা যেতে পারে।
টেবিল টেনিসে আঃ মান্নান, কবির, সাব্বির, ইকবাল, আলমগীর, বাবু, শাহজাহান, মুন্না, সোহেল, লিটন, রিয়াজ, নিলু, তহমিনা (রৌপ পদক প্রাপ্ত)।
হকিতে তুষার, মালেক , বাবু, রকিব, বাদল, রেজা, মিলন, মুসা । দাবায় চুন্নু, শহীদ , রকিবুল। ব্যাডমিন্টনে খসরু, লুৎফুল হামিদ। লন টেনিসে মাহবুবুল আলম, মোশাররফ হোসেন প্রমুখ পিরোজপুরের ক্রীড়াঙ্গনকে সমৃদ্ধ করেছেন।
পিরোজপুর জেলা ০১টি জাতীয় মানের মাঠ রয়েছে। এছাড়া প্রায় প্রতিটি উপজেলায় একটি করে মিনি স্টেডিয়াম রয়েছে।
পিরোজপুর জেলায় প্রাক্ শীত মওসুমে (অক্টোবর-নভেম্বর) বাৎসরিক আন্তঃ জেলা ও আন্তঃ উপজেলা ফুটবল প্রতিযোগিতা ,শীত মৌসুমে আন্তঃ স্কুল ও আন্তঃ উপজেলা ক্রিকেট প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।এছাড়া ব্যাডমিন্টন, ভলিবল, টেবিল টেনিস ,হাডুডু প্রতিযোগিতা নিয়মিতভাবে অনুষ্ঠিত হয়।
বিনোদন : প্রাচীন যুগে পিরোজপুর অঞ্চলের অধিকাংশ সাধারণ মানুষ ছিল কর্মক্লান্ত চাষী, তারা আনন্দ বা বিনোদনের অবসর পেত সামান্যই। তবুও গ্রামীন জনজীবনে হিন্দু- মুসলমানদের সম্প্রীতি, সখ্য ও বিরোধিতার মাঝেই এক মিলিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের ধারা সৃষ্টি হয়।তেল সলতেয় জ্বালানো পিদিমের আলোয় হিন্দু রমনীদের উলু ধ্বনি- ঘন্টার দ্যোতনায়, খায়রুল-হাসর, ইমাম হোসেনের পুঁথিপাঠ বিনোদনের সম্ভবত একমাত্র মাধ্যম ছিল।
কিন্তু পরবর্তী কালে থিয়েটার , যাত্রা, কবিগান, জারিগান, পুতুল নাচ, ঘোড়ার দৌড়, ষাঁড়ের লড়াই, নৌকাবাইচ, গ্রামীণ মেলা, বহুরুপীর খেলা ইত্যাদির আসর বসত।
বর্তমানে রায়ের কাঠির শিব চতুর্দশীর মেলা ও নাজিরপুরের জগৎধাত্রীর মেলা সমগ্র দক্ষিণ বাংলায় এক উল্লেখযোগ্য মেলায় পরিনত হয়েছে। সাধারণত শীত মওসুমেই সকল বিনোদন ধর্মী অনুষ্ঠান হয়ে থাকে।
বিখ্যাত টিভি অভিনেতা মমতাজ হোসেন নাজিরপুরের মানুষ। জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদ, অভিনেতা ও আবৃত্তিকার গোলাম মোস্তফার ছেলেবেলা কেটেছে এই পিরোজপুরেই। বিশ্ব বিখ্যাত জাদুকর জুয়েল আইচের বাড়ী পিরোজপুর শহরে।বিখ্যাত সংগীত শিল্পী খালিদ হাসাণ মিলুর জন্ম পিরোজপুরে।
পিরোজপুর শহরে ২টি সিনেমা হল রয়েছে । বলেশ্বর ব্রীজের পাশ্বে ডিসি পার্ক এ জেলার একমাত্র পার্ক। শহরের ৪টি কমিউনিটি সেন্টারে বিভিন্ন জাতীয় ও ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়ে থাকে।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস