পিরোজপুর জেলা শিল্প কারখানায় সমৃদ্ধ নয়। বড় ধরনের কোন শিল্প কলকারখানা এখানে এখনো গড়ে ওঠেনি। জনগোষ্ঠীর বৃহৎ অংশই কৃষিকাজে নিয়োজিত। এই জেলার কাউখালী লবন উৎপাদনে মোঘল ও বৃটিশ আমলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। জেলায় ৪টি লবন মিল ছিল। বর্তমানে মেসার্স পল্লী সল্ট ইন্ডাস্ট্রিজ, গণমান, নেছারাবাদ নামে মিলগুলো চালু আছে। বর্তমানে বিসিক শিল্প নগরে মোট ১৬৭ টি প্লট আছে, যার মধ্যে বরাদ্দকৃত প্লট সংখ্যা ১৪৪টি, বরাদ্দকৃত শিল্প ইউনিট ৯৯টি, উৎপাদনরত শিল্প ইউনিট ৫৯ টি এবং ২৬টি প্লট বরাদ্দের অপেক্ষায় আছে। ২০০২ সালের তথ্যমতে দেখা যায় পিরোজপুর জেলায় ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মাধ্যমে আত্ম-কর্মসংস্থান প্রকল্পে বিতরণকৃত শিল্প ইউনিট ১১৪টি। আয়বর্ধক কর্মকান্ডের মাধ্যমে দারিদ্র বিমোচন প্রকল্প যা ভান্ডারিয়াতে গ্রহণ করা হয়েছে, সেখানে বিতরণকৃত শিল্প ইউনিটের সংখ্যা ১৪৪টি।
অনেক পূর্বে পিরোজপুর সদর উপজেলায় একটি টেক্সাইল মিল নির্মাণ কাজ শুরু করলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। জেলার একমাত্র বিসিক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে নেছারাবাদ উপজেলার কৌড়িখাড়াতে। সেখানে নারিকেল ছোবড়া থেকে উৎপন্ন পাপোশ, দড়ি ও ছোবড়া এলাকার তথা দেশের বহুল চাহিদা মেটায়। অনেকের মতে এই ছোবড়া শিল্পটি ১০০ বছরেরও পুরনো। ১৯৬৬ সলে নেছারাবাদ উপজেলায় পাকিস্তান সরকার ‘কয়ার ইন্ডাষ্ট্রি’ নামে একটি শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর এই প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তিমালিকানায় চলে যায়। বর্তমানে ‘রানা-রাববী ইন্ডাস্ট্রি’ নামে প্রতিষ্ঠানটি চলছে। এ শিল্প এলাকায় আরও পাঁচটি ছোবড়া শিল্পের আধুনিক কারখানা গড়ে উঠেছে। বর্তমানে ছোবড়ার জায়গা ক্রমশ: দখল করে নিচ্ছে প্লাষ্টিক ও ফোম। ভান্ডারিয়া উপজেলায় ছোবড়া, হোগলা, চাচবুনন আর জালবুননের ক্ষুদ্র শিল্পও গড়ে উঠেছে। নেছারাবাদে ছোট ও মাঝারী মানের নৌযান তৈরির তিন চারটি ডক-ইয়ার্ড আছে। ডক ইয়ার্ডগুলোর একটি সরকারী পর্যায়ে ও বাকিগুলো ব্যক্তিমালিকানায় গড়ে উঠেছে। প্রতিবছর উল্লেখযোগ্য নৌযান এখান থেকে তৈরি হয়।
কাউখালীতে সমবায়ভিত্তিক একটি শীতল পাটি তৈরির প্রকল্প আছে। শীতল পাটি বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ব্যাপকভাবে বিক্রি হয়। নেছারাবাদে স্থানীয় কামারদের দ্বারা তৈরি লোহার পেরেক এবং হস্তচালিত তাঁত কারাখানা প্রসিদ্বি ও প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে।
মঠবাড়ীয়াতে বাঁশ বেতের হস্তশিল্প গড়ে উঠেছে। এছাড়া জেলার বহুস্থানে চালের কল, আটার কল, করাত কল, বরফ কলের মত ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্প রয়েছে।
নবগঠিত জিয়ানগর উপজেরার পাড়েরহাট একটি বর্ধিষ্ণু ও উল্লেযোগ্য স্থান। এখানে জেলার সর্ববৃহৎ মাছের হাট অবস্থিত।উল্লেখ্য পিরোজপুরে মোট মাছের উৎপাদন ২,৯৩০ মেট্রি্ক টন।
পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে: মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, এটুআই, বিসিসি, ডিওআইসিটি ও বেসিস